Table of Contents
কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। তবুও অনেকেরই অজানা রয়েছে যে কালোজিরা কিভাবে খেলে এবং কিভাবে ব্যবহার করলে কালোজিরার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। আজকে আমরা জানবো কালোজিরার পুষ্টি গুনাগুন ও কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে। কালোজিরা এমন একটি শস্য দানা যা সম্পর্কে আমাদের হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করেছেন। তিনি স্পষ্ট আকারে বলেছিলেন যে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের মহা ঔষধ হচ্ছে কালোজিরা। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে কালোজিরা মানবদেহের জন্য কতটা উপকারী । তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে।
কালোজিরা কি
কালোজিরা হলো এক ধরনের শস্য দানা শস্য বীজ। যা দেখতে একদম কুচকুচে কালো ছোট আকারের। ব্লাক কামিন বা কালোজিরা এর বৈজ্ঞানিক নাম Black Caraway, also known as Black Cumin, Nigella, Kalojeere। কালোজিরার গাছ মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে। এটি দেড় থেকে দুই ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়। এর ফুলগুলো সাদা রঙের হয়ে থাকে। এটি বছরে একবার উৎপাদন করা যায় এবং একটি গাছ থেকে একবারও ফুল ধরে এবং মারা যায়। প্রতিটি সাধারণ আকৃতির ফুল থেকে গোল আকৃতির একটি ফল হয়। এই ফল থেকে 20 থেকে 25 টি তিনকোনা আকৃতির ফল পাওয়া যায়। শস্য দানা গুলো খুব ছোট আকৃতির হলেও কালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম।
কালোজিরার পুষ্টি উপাদান
এত অল্প কথায় কালোজিরার উপকারিতা ও পুষ্টি গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকেই এটি মসলা হিসেবে ব্যবহার হলেও নানান ধরনের রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কালোজিরার ব্যবহার অনস্বীকার্য। জীবাণুনাশক, অম্লনাশক উপাদান রয়েছে কালোজিরাতে। এতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটি্ ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম। এনজাইম 5.25 মিলিগ্রাম ফসফরাস মাইক্রো গ্রাম মাইক্রো গ্রাম 18 লৌহ কার্বোহাইড্রেট। কালোজিরা হরমোন ঠিক রাখে এবং প্রস্রাব সংক্রান্ত রোগ প্রতিরোধ করে। এতে অলিক এসিড, লিনোলিক এসিড বিদ্যমান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।
কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা
প্রাচীনকাল থেকেই কালোজিরা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে কালোজিরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা নিয়ে আজকের পোস্ট টি লেখা। পড়ুন মনোযোগ দিয়ে। এটি সকল প্রকার রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। রান্নার পাশাপাশি এটির তেল খাওয়া ও সেবন করা যায়। আসুন কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে
শরীরের কোথাও ব্যথা অনুভূত হলে কালোজিরার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যথা কমাতে কালোজিরার তেল মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। ব্যথাযুক্ত স্থানে কালোজিরার তেল মালিশ করে গরম সেক দিলে খুব দ্রুত এর ফল পাওয়া যা…
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি কালোজিরা
গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ সন্তানের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আর তাই সন্তান প্রসব পরবর্তী সময়ে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে কালোজিরা এর জুড়ি নেই। সন্তান প্রসবের সাত থেকে দশ দিন আগে থেকে 5 থেকে 10 গ্রাম কালোজিরা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পায়। এভাবে 10 থেকে 15 দিন খেলে আল্লাহর রহমতে বাচ্চার জন্য বুকের দুধের অভাব হবে না। মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে কালোজিরা পাটায় পিষে ভর্তা করে ভাতের সাথে খাওয়া যেতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে কালোজিরা
মানবদেহের ক্যান্সার প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা রাখে কালোজিরা কেরাটিন। কালোজিরা তে থাকা একশটি প্রতিষেধক উপাদানের মধ্যে এটি একটি। যা ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে থাকে।
চুল পড়া প্রতিরোধে কালোজিরা
চুল পড়া প্রতিরোধে কালোজিরার উপকারিতা অশেষ। যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ে যায় তারা নিয়মিত কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পারেন। কালোজিরার তেল চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় ও গোড়া শক্ত করে। কালোজিরা এর তেল ও অলিভ অয়েল একসাথে ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা
কালোজিরা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়মিত কালোজিরা খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
সর্দি জ্বর ও মাথা ব্যথায় কালোজিরা
আমরা প্রায়ই সর্দি জ্বর মাথাব্যথায় ভুগে থাকি। ঠান্ডা বা বা সর্দি জ্বরে এটি খুব ভালো কাজ করে। দীর্ঘদিনের ঠান্ডা সর্দি থাকলে কালোজিরা পাটায় পিষে ভর্তা করে গরম ভাতের সাথে খেতে পারেন। আমিতো কয়েকদিন খেলে ঠান্ডা রোগ ভালো হয়ে যায়।
যৌন সমস্যা সমাধানে কালোজিরা
কালোজিরা যৌন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কালোজিরার তেল সেবন করলে অথবা কালোজিরা খেলে যৌন সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়। তাই যাদের সক্ষমতা কম তারা কালোজিরা সেবন করতে পারেন এবং এর তেল যৌনাঙ্গে মালিশ করতে পারেন। আশা করি খুব কার্যকারী ফল পাবেন।
কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তবে জেনে রাখা ভালো যে কালোজিরার উপকারিতা অশেষ। বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। কালোজিরা যথাযথ নিয়ম বলতে কিছু নেই। তবে নিয়মিত খেলে অথবা সেবন করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া যেতে পারে। কালোজিরা ভর্তা করে ভাতের সাথে যে কোন সময় খাওয়া যেতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধ ও কালোজিরা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। খাওয়া শেষে 10 থেকে বারোটি দানা চিবিয়ে খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায় এবং অম্লত্ব কেটে যায়।
কালোজিরার তেল এর উপকারিতা
আমরা আজকে কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা বিশেষভাবে আলোচনা করেছি। এখন আমরা বলব কালোজিরার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে। কালোজিরার তেল ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। শরীরে ব্যথা হলে ও বেশি তে সমস্যা দেখা দিলে কালোজিরার তেল মালিশ করে ব্যথাযুক্ত স্থান বা পেশিতে গরম সেঁক দিতে পারেন। এতে করে ব্যথা খুব দ্রুত উপশম হবে। কালোজিরার তেল পুরুষাঙ্গে মালিশ করলে দীর্ঘ মোটা ও যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কালোজিরার ক্ষতিকর দিক
কালোজিরা এক মহা ঔষধ। কালোজিরার উপকারিতা ছাড়া অপকারিতা নেই বললেই চলে। হাদীসে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঔষধ এসেছে আখ্যায়িত করেছেন। কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কালোজিরা জীবনের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কালোজিরা সেবন না করায় উত্তম। যাদের কালোজিরা এলার্জি তারা কালোজিরা কম খাবেন।
পরিশেষে
কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা সহ কালোজিরা তেলের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি। কালোজিরার পুষ্টি উপাদান এবং কালোজিরা সম্পর্কে নানান তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনার এই পোস্ট পড়ে উপকৃত হয়েছেন। পোস্টটি পড়ে কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাবেন। কোন ভুল বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখুন। আপনার উপদেশ সাদরে গ্রহণ করা হবে।
1 thought on “কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সমুহ”