টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ি এর পাইকারি বাজার, দাম, ইতিহাস ও ছবি

আপনারা অনেকেই বিখ্যাত টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ি এর ইতিহাস জানতে চান। কেউ কেউ আবার টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি কালেকশন নেটে সার্চ দিয়ে থাকেন। আজকের এই পোস্টটি শুধু তাদের উদ্দেশ্য করে লেখা। আজকের এই পোস্ট টিতে টাঙ্গাইল শাড়ির ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো। সেই সাথে টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার কোথায় সেটাও তুলে ধরবো। এবং টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ি এর ছবি কালেকশন দেখাবো। টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার, দাম ইতিহাস জানতে ও ছবি কালেকশন দেখতে পুরো পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

“ নদীর চর খাল-বিল   গজারি বন,

  টাঙ্গাইলের  শাড়ি তার গর্বের ধন”

টাঙ্গাইল জেলাকে ঘিরে রেখেছে নদী। আর এর ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রেখেছে মধুপুরের শাল বন। এই সেই গর্বকে সমুজ্জ্বল করেছে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। আসুন প্রথমেই জেনে নেই বিখ্যাত টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ির ইতিহাস। 

টাঙ্গাইল শাড়ির ইতিহাস

মূলত টাঙ্গাইল শাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে যতদূর জানা যায় তা হল তারা মূলত বণিক বা বসাক গোষ্ঠী। এরা মূলত হিন্দু সম্প্রদায় এবং ঢাকার ধামরাইয়ে বসবাস করা লোকজন ছিলেন। প্রাচীনকালে তারা তৎকালীন রাজার অনুরোধে টাঙ্গাইল জেলায় আসেন এবং  দেলদুয়ার জেলার পাতরাইল ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জায়গায় বসবাস শুরু করে  দেন। এবং সেখানে ধীরে ধীরে তাদের আদি ব্যবসা  শাড়ি   বোনার কাজ করেন। তারা মূলত প্রাথমিকভাবে নকশা  বিহীন শাড়ি তৈরি করত।পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন সহ শাড়ি শুরু করে দেন এবং একপর্যায়ে তারা ভারতের সাথে সংযুক্ত হয়ে নকশাযুক্ত শাড়ি তৈরি শুরু করে দেন। মূলত এভাবেই টাঙ্গাইলের শাড়ি তৈরি শুরু হয়ে যায় এবং তা সারা দেশে বিখ্যাত হয়ে যায়।

টাঙ্গাইল সুতি শাড়ি দাম

টাঙ্গাইল শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল কিনার  বা পাড়ের নকশা। এটি উন্নত ও আধুনিক ডিজাইন হয় দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। মূলত নব্বই দশকের দিকে টাঙ্গাইল শাড়িতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা  হয়। কটন শাড়ির পাশাপাশি হাফ সিল্ক দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে উৎপাদন প্রযুক্তির উন্নয়ন কৌশল অত্যাধুনিক হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।  টাঙ্গাইল শাড়ির বিভিন্ন নাম সহ দরদাম বাজারে যাচাই করে উল্লেখ করা হলোঃ

সফট সিল্ক শাড়ির দাম ৯৫০- ৫০০০ টাকা, 

সফট কটন শাড়ির দাম ৬৫০- ৩৫০০ টাকা, 

বালুচরি শাড়ির দাম ১৪০০-২৮৫০ টাকা, 

তসর সিল্ক শাড়ির দাম ১৯০০- ৪৫০০ টাকা, 

সম্বলপুরী শাড়ির দাম ৭৫০- ৩০০০ টাকা, 

সিল্ক কাতান শাড়ির দাম ২৫০০- ১০০০০ টাকা এবং 

অন্যান্য শাড়ির দাম ৬০০- ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই দাম বাজার পরিস্থিতি ও সময় এর উপর নির্ভর করে তারতম্য হয়ে থাকে।

টাঙ্গাইল জেলার পোস্ট কোড ও এরিয়া কোড জানুন

টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার

অনেকেই টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার কোথায় জানতে চান। মূলত টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানা পাথ্রাইল নামক গ্রামে টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার। এই গ্রামে ঢাকা ও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বণিকদের আবাসস্থল। হিন্দু বণিকেরা টাঙ্গাইলে  শাড়ির কাজ শুরু করে। এবং পরে তা টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন মার্কেটে পাওয়া  যাবে। টাঙ্গাইল শহরের প্রতিটি শাড়ির মার্কেট পাইকারি ও খুচরা দামে শাড়ি বিক্রি হয়। তাছাড়া উপায় গ্রামে পাইকারি দামে শাড়ি কিনতে পাওয়া  যায়। মূলত টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন তাঁতশিল্প শ্রমিকেরা বুনন কাজ শেষ করে সেই শাড়ি পরিপাটি ও সিস্টেম করে দেলদুয়ার নিয়ে আসে। এবং সেই পাতরাইল গ্রামের বণিকদের কাছে পাইকারি দামে বিক্রি করে। এরপর তাঁরা এ শাড়ি এখান থেকে ঢাকা ইসলামপুর ও অন্যান্য পাইকারি মার্কেট খুচরা মার্কেটে বিক্রি করে থাকেন। তারা বিদেশেও রপ্তানি করে  থাকেন।

টাঙ্গাইল শাড়ির বৈশিষ্ট্য

গুনে মানে ভরপুর টাঙ্গাইল শাড়ি। বাংলাদেশের শাড়ি গুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল শাড়ি গুনে মানে অনন্য। টাঙ্গাইল শাড়ির বৈশিষ্ট্য মুলত টাঙ্গাইল শাড়িকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছে। এই শাড়ির পাইর এর বা সাইডের ডিজাইন মুলত একে আকর্ষিণীও করে তোলে। টাঙ্গাইল শাড়ির ডিজাইন ও নকশার ডিজাইন গুলো খুবই আকর্ষণীয় হয়। তাছাড়া এর সুতার মান খুবই ভাল। যার কারনে এই শাড়ি পরতেও বেশ আরাম দায়ক। মুলত সুতার গুনগত মান ভাল হওয়ায় এই শাড়ির মান ভাল।

টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি

বিখ্যাত টাঙ্গাইল শাড়ির ডিজাইন ও ছবি লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে থাকেন। তাদের জন্য কিছু টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি কালেকশন দিয়েছি। যদিও এটা টেক্সট মেসেজ তবে আমরা চেষ্টা করেছি কিছু সুতি শাড়ি, কিছু কটন শাড়ি, জামদানি শাড়ি ও পায়ের সহ শাড়ির ছবি দিয়েছি। আপনার টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি দেখতে  ও কালেকশনে রেখে দিতে পারেন।

টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ি
টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি কালেকশন

"<yoastmark

"<yoastmark

"<yoastmark

পরিশেষে:

প্রভাতের প্রচলন সেই প্রাচীনকাল থেকেই। মূলত টাঙ্গাইলের শাড়ি বাংলাদেশ তথা বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নিয়েছে। টাঙ্গাইল শাড়ি উৎপাদন কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সুনদর জীবনযাপন অতিবাহিত করছে টাঙ্গাইল এর সাধারণ মানুষ। পোস্টটিতে টাঙ্গাইলের শাড়ি কালেকশন, টাঙ্গাইল শাড়ির ছবি কালেকশন টাঙ্গাইল শাড়ি পাইকারি মার্কেট ও  টাঙ্গাইল শাড়ির ইতিহাস আলোচনা করা হয়েছে। টাঙ্গাইল সুতি জামদানি শাড়ি এর পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং বুঝতে পেরেছেন। কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর আপনি টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা হলে পোস্ট টি ফেসবুকে শেয়ার করে দেবেন। 

Leave a Comment