কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা ও কিচমিচ খাওয়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমি হাজির হয়েছি একটা গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট কিসমিস নিয়ে। আজকে আলোচনা করা হবে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। কিসমিস  মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটা ফল।  এটা কাঁচা অথবা শুকনা খাওয়া যায় অথবা ভিজিয়ে খাওয়া যায়। 

আজকে কিসমিস কিসমিসের পুষ্টিগুণ, কিসমিস কখন খেতে  হয়, কিসমিস খেলে কি  উপকার হয়, রাতে কিসমিস খেলে কি উপকার   হয়, সকালে খালি পেটে কিসমিস কিসমিস খেলে কি হয়, মধুর সাথে কিসমিস খেলে কি হয় ইত্যাদি বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে আপনি এই পোস্টটা পড়তে পারেন। যদি আপনার অবশ্যই উপকারে লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনের সাথে শেয়ার করতে পারেন বিষয়টি।

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

 আপনারা ছোট-বড় সকলেই হয়তো জেনে থাকবেন আঙ্গুর  একটি  বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় একটি  পুষ্টিকর ফল। তাই আমরা আজ হাজির হয়েছি কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। আঙ্গুর ফল রোদে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়।  সাধারনত রোদে শুকিয়ে কিসমিস করা হলে এর পুষ্টি গুনাগুন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিসমিসে ভিটামিন,খনিজ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, পলিফেনলস এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি ফাইবার রয়েছে যা শরীরের শক্তি বর্ধক ও ক্যালোরি উৎপাদক হিসেবে কাজ করে থাকে। যার কারণে কিসমিস খেলে মানুষের শরীরের শক্তি এবং দৈহিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আসুন আমরা জেনে নেই এক নজরে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেঃ

১। কিসমিস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ  আপনি যদি দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে থাকেন তাহলে আপনি নিয়ম করে কয়েক দিন কিসমিস শুকনা অথবা ভিজিয়ে সকালে অথবা রাত্রে খেতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য একেবারে চিরতরে দূর হয়ে যাবে।

২। কিসমিস ওজন বৃদ্ধি করেঃ  আজকাল সবাই  চিকন শরীর পছন্দ করেন আবার অনেকেই আছেন যারা একটু শুকনা টাইপের। তারা বিভিন্ন  ভাবে  চেষ্টা করে থাকেন কিভাবে শরীরের ওজন একটু বৃদ্ধি করা যায় অথবা একটু মোটা হতে চাচ্ছেন তাদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে আপনারা নিয়ম করে রাতের বেলা ঘুমানোর আগে কিছু শুকনা কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে উঠে সেই কিসমিস ভেজানো পানি এবং কিসমিস ফেলুন নিয়মিত এই কাজটা করলে খুব দ্রুতই আপনার শরীরের ওজন স্বাভাবিক ভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি পেয়ে যাবে কোন রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া।

৩। কিসমিস ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

শুকনা কিসমিসের রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ফাইবার ভিটামিন খনিজ যা মানবদেহে ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে সুস্থ ও সুঠাম রাখে।

৪। কিসমিস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে, একদল গবেষক অনেকদিন গবেষণা করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। মানবদেহের সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের রক্তচাপ কে নিয়ন্ত্রণ করে পটাশিয়াম।

৫। কিসমিস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ  কিসমিসে থাকা সকল মানব   দেহের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকা ফাইবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আয়রন পটাসিয়াম ইত্যাদি কিভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেই সাথে মানুষের শরীরের অবসাদ দূর করে এবং রাতে ঘুম ভালো হয়।

৬। কিসমিস যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কিসমিসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফাইবার খনিজ লবণ ভিটামিন সহ আরো কিছু ফাইবার থাকার কারণে মানুষের শরীরের শুক্রানু বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শুক্রাণুর ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা ও মানব শরীরে যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

 কিসমিস কিভাবে উৎপাদন করা হয়

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো  আঙ্গুর উৎপাদনে বিখ্যাত। আমাদের সবার মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে কিসমিস কিভাবে উৎপাদন করা হয়। প্রতিবছর আঙ্গুরের মৌসুম প্রচুর আঙ্গুর উৎপাদন করে। তারা সেই আঙ্গুলগুলো বাজারজাত করার সাথে সাথে অতিরিক্ত আঙ্গুর গুলো সেগুলো অথবা মেশিনারিজ বিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ে আঙ্গুল গুলো কি শুকিয়ে ফেলে।  শুকানো আঙ্গুর গুলাই মুলত কিসমিস তৈরি হয়ে যায়।  সাধারণত মেশিনারিজ বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আঙ্গুর থেকে কিসমিস বানানোর জন্য আঙ্গুর বাগানের পাশে কারখানা তৈরি করা হয় সেখানে মেশিনারিজ  উপায় সংগ্রহ করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে সাজিয়ে রাখা হয় এবং  তাপ উৎপাদন করা হয় যার ফলে শুকিয়ে যায় এবং কিসমিস তৈরি হয়। অতঃপর সে গুলোকে উন্নত প্রযুক্তিতে প্যাকেটজাত করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

কিসমিসের পুষ্টিগুণ

এখানে কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম। ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম।

সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিস শরীরের নানাবিদ উপকার করে থাকে। তেমনি সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা রয়েছে। নিয়মিত কিসমিস খেলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে দেহে তেসস্তরেন হরমন তৈরি হয় আর যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। কিসমিস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ফলে স্ত্রী সঙ্গম করতে আগ্রহ বাড়ে। তাছাড়া নিয়মিত কিসমিস খেলে মন ভাল থাকে। তাই আপনি যদি যৌন দুর্বলতায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত কিছুদিন কিসমিস খান দেখবেন যৌন সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে। মধুর সাথে কিসমিস খেলে সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা বেশি পাবেন।

সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী একটা ফল। কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা দেখুন। আসুন জেনে নেয়া যাক কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা। সেই সাথে আর জানব সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা। কিসমিস শরীরের রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করে এবং আয়রনের ঘাটতি দূর করে থাকে।  তাই মানবদেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কিসমিস খেয়ে থাকি। কিসমিস হার্ট ভালো রাখার সহ হাড়ের বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই যদি নিয়মিত খালি পেটে কিসমিস খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে কিসমিসের গ্রহণযোগ্যতা শরীরে বেড়ে যায় এবং দ্রুত সকল কিসমিসের উপাদান গ্রহণ করে যার ফলে দ্রুত কিসমিসের উপাদান গ্রহণ করে কার্যক্ষমতা দ্রুত হয় তাই খালি পেটে কিসমিস খাওয়া টা বেশি উপকারী।

যৌন সমস্যা প্রতিরোধক কিসমিস

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে অনেকেই অনেক পোস্ট লিখেছেন। তবে আপনি এই পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ এই পোস্ট টি অনেক তথবহুল। বর্তমান সময়ে যৌন সমস্যা একটি মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। আজ কাল যৌন সমস্যায় ভোগে না এরকম লোকের সংখ্যা খুবই কম। প্রতিনিয়ত তাঁরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়ে থাকেন যৌন সমস্যা সমাধানের জন্য। তারা ভুল করে বিভিন্ন রাসায়নিক বা ক্ষতিকর বিভিন্ন ঔষধি খেয়ে থাকে যা একটা সময় মানুষের শরীরের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি করে এবং যৌন সমস্যা টা কে দীর্ঘস্থায়ী করে ফেলে।

তাই আপনাদের প্রতি আমার একটা অনুরোধ থাকবে যারা সত্যিকারঅর্থে যৌন সমস্যায় ভুগতেছেন তাদেরকে বলব আপনারা ডাক্তারি অথবা কবিরাজি চিকিৎসা করার পূর্বে নিজে নিজে কিছু চিকিৎসা করে নিতে পারেন। যৌন সমস্যা প্রতিরোধক কিসমিস আপনি নিয়মিত তিন মাস কিচমিচ খেতে পারেন। এটা সকালে অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে    দশটি অথবা তার বেশি কিসমিস নানা খেতে পারেন। এতে করে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলা কাজ করে দেহে শুক্রাণু বৃদ্ধি করে এবং যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কিচমিচ ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস সফলভাবেই খাওয়া যায় তবে শুকনা কিসমিসের চেয়ে ভেজা কিসমিসের উপকারিতা বেশি। কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে লোহিত কণিকা বৃদ্ধি করে এবং নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার রক্ত বৃদ্ধি করা সহ শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই উচিত শুকনা কিসমিসের চেয়ে বেশি।

পরিশেষে:

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম ও পুষ্টি গুনাগুন বিস্তারিত বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে থেকে আপনারা জানতে পারবেন কিসমিস খেয়ে কিভাবে যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। মানুষ বিভিন্ন শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। এত শত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে শুধুমাত্র আপনাদের অবগত করার জন্য। আমার এই পোস্ট টি আপনাদের কাছে যদি ভালো লেগে থাকে, পোস্টটি কেমন লেগেছে সে বিষয়ে আপনারা আমাদেরকে মন্তব্য করতে পারেন।

যদি কোন ধরনের সাজেশন অথবা ভুল থেকে থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কমেন্ট বক্সে তুলে ধরতে পারেন। আশা করি আমি আপনার দেয়া সাজেশন থেকে শিক্ষা পরবর্তী আরও তথ্য আরো তথ্যবহুল পোস্ট শেয়ার করব। এবং এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই বন্ধুবান্ধব অথবা আত্মীয় স্বজনের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য।

Leave a Comment